আবু বাসির (রা) এর ঘটনা ও বর্তমান যুগে বিদেশে হামলা – ২ (অভিযোগের পর্যালোচনা)

এই সিরিজের পর্ব ১ এর অনেক বিষয়ে কিছু আপত্তি উল্লেখ করেছেন জনৈক আলিম। এখানে সে হিসেবে আমার বক্তব্য পেশ করছি।

অভিযোগ ১

পর্ব ১ এ বলা হয়েছে, //তাই ‘আল্লাহর রাসূল ﷺ চুপ ছিলেন’, এই কথা বলেই কোন রকম ফকিহদের তাখরিজ বা তাদের গবেষণালব্ধ উপসংহার উল্লেখ না করে নিজে নিজেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যে, এটার অনুমোদন তিনি দিয়েছেন – এটি স্পষ্ট ফিকহি বিপর্যয়। এইভাবে ফকিহদের ব্যাখ্যা অগ্রাহ্য করে সরাসরি হাদীস থেকে যাহিরি একটা হুকুম বের করে নিয়ে আসার কাজটি আধুনিক যুগের অনেক যাহিরিরা করে থাকেন। এই পন্থাকে মূল ধারার আলিমগণ অশুদ্ধ ও গোমরাহী পন্থা বলে অভিহিত করে থাকেন।//

এই বক্তব্য সঠিক নয় দাবি করে বলা হলো,

//  যে ব্যক্তি নিজেকে কোনো ইমাম বা সুলতানের আনুগত্যের অন্তর্ভুক্ত করেনি বা একদা করে থাকলেও পরে নিজেকে তা থেকে গুটিয়ে নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে, তার জন্য সেই ইমাম বা সুলতানের চুক্তি রক্ষা করা বা তাদের সাথে কৃত অঙ্গিকার পূরণ করা মোটেও অপরিহার্য নয়। এজন্যই তো আমরা দেখি, আবু বাসির (রা) মক্কার দুই দূতের একজনকে যে হত্যা করলেন, এর জন্য মক্কাবাসী নবি সা. এর কাছে রক্তপণ দাবি করেনি। কারণ এ বিষয়টি তাদেরও অজানা ছিলো না। আবু বাসির (রা) সেই বিপদের মুহূর্তে কীভাবে মুক্তি পেতে পারেন, রাসুলুল্লাহ সা. কৃত চুক্তি ভঙ্গ না করে তাকে তার নির্দেশনা দিয়েছেন।//

এবং এরপর অভিযোগ করা হলো, আমি তাহলে কেন বললাম আল্লাহর রাসূল ﷺ হত্যাকান্ডের অনুমোদন দেন নি।

উত্তরঃ পর্ব ১ এ বলা হয়েছে // নিজে নিজেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যে, এটার অনুমোদন তিনি দিয়েছেন// অর্থাৎ, ***হত্যাকান্ডের*** অনুমোদন। অভিযোগকারী নিজেও কিন্তু হাদীসের শারহ থেকে এটা দেখাতে সক্ষম হন নি, যে আল্লাহর রাসূল ﷺ হত্যাকান্ডকে অনুমোদন দিয়েছেন। বরঞ্চ যা দেখানো হলো, তা হলো  // যে ব্যক্তি নিজেকে কোনো ইমাম বা সুলতানের আনুগত্যের অন্তর্ভুক্ত করেনি বা একদা করে থাকলেও পরে নিজেকে তা থেকে গুটিয়ে নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে, তার জন্য সেই ইমাম বা সুলতানের চুক্তি রক্ষা করা বা তাদের সাথে কৃত অঙ্গিকার পূরণ করা মোটেও অপরিহার্য নয়।//

অথচ আমরা এটা অস্বীকার করি নি। আমরা প্রথমেই বলেছি এটাতে মদীনা স্টেটের কিছু এসে যায় না, কারণ আবু বাসীর (রা) মাদীনাতে রাসূল ﷺ এর আনুগত্যে ছিলেন না। সে কারণেই রাসূল ﷺ তার কোন দায়িত্ব নেন নি। এটাতে কেউ দ্বিমত করে নি। এটা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়।

 

অভিযোগ ২

আরো বলা হয়েছে // এতে আবু বাসিরের (রা) প্রতি পলায়নের ইঙ্গিত রয়েছে, যাতে রাসূল ﷺ তাকে ওদের হাতে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য না হন এবং এতে অন্যান্য মুসলমানদের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে, যাদের কাছে এই বার্তা পৌঁছবে, তারা যেনো তার সঙ্গে যুক্ত হয়।//

উত্তরঃ

এখানেও আমাদের পূর্বের বক্তব্যে কোন সংঘর্ষ নেই, কেননা আমরা বারংবার বলেছি যে শারহকারীগণ অবশ্যই পলায়নের ইশারার কথা বলেছেন। শারহকারীগণ কেউ কি এইভাবে বলেছেন, যে তিনি হত্যাকান্ডের অনুমোদন দিয়েছেন?


অভিযোগ ৩

আরো বলা হয়েছে

//আবু বাসির রা. যা কিছু করেছেন, তা তার জন্য নাজায়িয ছিলো না, বরং সম্পূর্ণ জায়িয ছিলো। আর তাই তো স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সা. তাকে ইঙ্গিতে সেই কাজের পরামর্শ দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে যখন তার কাফেলা ভারি হয়েছে, তখন পর্যন্ত তাদের ওপর কোনো বাধানিষেধ আরোপ করেননি কিবা তাদের কাজের ব্যাপারে কোনো খারাপ মন্তব্য করেননি। যদি এটাকে রাসুলের মৌন অনুমোদন হিসেবে অভিহিত করা হয়, তাহলে তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। আর ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকেও এতে খারাবি বা অনুত্তমতার কোনো দিক নেই। অন্তত হাদিসের কোনো পাঠক এমন মন্তব্য করার কোনো সাধারণ যুক্তি ও কারণ নেই।//

উত্তরঃ এখানে অভিযোগকারীর বক্তব্য লক্ষ করুন।   // আবু বাসির রা. যা কিছু করেছেন, তা তার জন্য নাজায়িয ছিলো না, বরং সম্পূর্ণ জায়িয ছিলো। আর তাই তো স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সা. তাকে ইঙ্গিতে সেই কাজের পরামর্শ দিয়েছেন//

আবু বাসির (রা) যে হত্যাকান্ড করেছেন, সেটাতে তাহলে স্বয়ং রাসূলের ইঙ্গিত ছিল? নাকি ইঙ্গিত ছিল এই হত্যাকান্ড ঘটানোর পরে পালিয়ে যাওয়ার? অভিযোগকারীর লেখার ধরণে তা বোঝার উপায় নেই। প্রকৃতপক্ষে রাসূল ﷺ এর ইঙ্গিত ছিল তাঁর পালিয়ে যাওয়ার দিকে যা শারহে স্পষ্ট।

এছাড়া হাদীসেই তাঁর ইঙ্গিতের ব্যাপারে স্পষ্ট কথা বলা আছে, সেসবকে কেন আমলে নেয়া হবে না?

قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ وَيْلُ أُمِّهِ مِسْعَرَ حَرْبٍ، لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ ‏”‏‏.‏ فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ، فَخَرَجَ حَتَّى أَتَى سِيفَ الْبَحْرِ

এখানে স্পষ্ট দিবালোকের মত বোঝাই যাচ্ছে আল্লাহর রাসূলের কথা لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ কে আবু বাসির (রা) কী বুঝেছিলেন।

فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ

এটা শুনতেই আবু বাসির (রা) বুঝে নিলেন তাঁকে তাদের (মুশরিকদের) কাছে ফেরত পাঠানো হবে। হাদিসের স্পষ্ট বক্তব্য থাকতে কেন বারংবার এই বিষয়ের অবতারণা?

 

অভিযোগ ৪

আরো বলা হয়েছে // পরবর্তীতে যখন তার কাফেলা ভারি হয়েছে, তখন পর্যন্ত তাদের ওপর কোনো বাধানিষেধ আরোপ করেননি কিবা তাদের কাজের ব্যাপারে কোনো খারাপ মন্তব্য করেননি। যদি এটাকে রাসুলের মৌন অনুমোদন হিসেবে অভিহিত করা হয়, তাহলে তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।//

উত্তরঃ আমরা আগের পর্বেই আলোচনা করেছি আল্লাহর রাসূল ﷺ আবু বাসির (রা) এর জান বাচানোর জন্য তাঁকে পালিয়ে সংগঠিত হয়ে থাকার ইশারা করেছেন। তিনি তাঁর কোন প্রকার দায়িত্ব নেন নি। নিতে চান নি। বরং সময়ক্ষেপণ করলে তাঁকে মুশরিকদের হাতেও তুলে দিতে তিনি বাধ্য হতেন। তাই বারংবার তিনি কিছু বলেন নি, কিছু বলেন নি এইভাবে একই কথা পুনরাবৃত্তির হেতু জানা নেই।
অভিযোগ ৫

বলা হয়েছে  //যদি এটাকে রাসুলের মৌন অনুমোদন হিসেবে অভিহিত করা হয়, তাহলে তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।//

উত্তরঃ

এই বিষয়ে আগেও বলা হয়েছে মৌনতা দিয়ে কীসের ইঙ্গিত করা হয়েছে। বারংবার একই বিষয়ের অবতারণা অযাচিত।

অভিযোগ ৬

// আর ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকেও এতে খারাবি বা অনুত্তমতার কোনো দিক নেই। //

উত্তরঃ

আমরা ফিকহ এর দৃষ্টিতে এটা জঘন্য কাজ, খারাপ কাজ, পচা কাজ ইত্যাদি কিছুই বলি নি। আমাদের আলোচনা ছিল এই ঘটনা থেকে কাফির দেশে ৯/১১ ঘরানার হামলার দলিল সাব্যস্ত হয় কিনা। আমার সম্মানিত ভাইগণ সেখান থেকে বারবার সরে এসেছেন, আসছেন।

 

অভিযোগ ৭

আরো উল্লেখ করা হয়েছে

//ইবনু মুল্লাকিন রহ.সহ অসংখ্য মুহাদ্দিস বিষয়টিকে এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন। আওনুল মা’বুদ গ্রন্থে হাফিজ ইবনু হাজারের উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে—

وَفِيهِ إِشَارَةٌ إِلَيْهِ بِالْفِرَارِ لِئَلَّا يَرُدُّهُ إِلَى الْمُشْرِكِينَ وَرَمْزَ إِلَى مَنْ بَلَغَهُ ذَلِكَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ أَنْ يَلْحَقُوا بِهِ

এতে আবু বাসিরের (রা) প্রতি পলায়নের ইঙ্গিত রয়েছে, যাতে রাসূল ﷺ তাকে ওদের হাতে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য না হন এবং এতে অন্যান্য মুসলমানদের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে, যাদের কাছে এই বার্তা পৌঁছবে, তারা যেনো তার সঙ্গে যুক্ত হয়।//

উত্তরঃ আমাদের কথাও সেটাই। এখানে পলায়নের ইঙ্গিত ছিল বেশাক। তাঁর আচমকা হত্যাকান্ডের পর নিজের জীবন বাঁচাতে সংঘবদ্ধ হয়ে পালিয়ে থাকা ছাড়া আর গতি কি ছিল? বারবার পলায়নের ইঙ্গিতকে হত্যার অনুমোদনের ইঙ্গিত হিসেবে উল্লেখ কেন করা হবে তা বোধগম্য নয়।

 

অভিযোগ ৮

এরপর অভিযোগ করা হলো ওয়াইলু উম্মিহি নিয়ে। তিনি বললেন,

// যেমন আল্লামা আইনি বলেন—

وَهِي كلمة: أَصْلهَا دُعَاء عَلَيْهِ، وَاسْتعْمل هُنَا للتعجب من إقدامه فِي الْحَرْب، والإيقاد لنارها وَسُرْعَة النهوض لَهَا

এটা উমদাতুল কারি গ্রন্থের ইবারত। আল্লামা আইনির বক্তব্য। আল্লামা কাসতাল্লানিসহ অন্যরাও এর এই অর্থই নিয়েছেন। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সা. তাকে বদদোয়া দিচ্ছেন না। বরং তিনি আবু বাসির রা. এর কর্ম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করছেন। //

উত্তরঃ অথচ এখানে আল্লামা ‘আইনি বলছেন এই কালামের আসল হলো, “কারো প্রতি বদ-দু’আ করা”। কিন্তু এখানে তা যুদ্ধের আগুন উসকে দেয়ার কারণে তা’আজ্জুব হবার অর্থে ব্যবহৃত।

কিন্তু তা’আজ্জুব হবার অর্থ এই নয় যে তা বিলা শাক পজিটিভ হতে হবে। হাদিসের শারহে এটা কেবলই একটা মতামত যে এর অর্থ যাহির অর্থ থেকে ভিন্ন হবে।আর আল্লামা ‘আইনির বক্তব্যে এটাই যাহির যে তিনি যুদ্ধের আগুন উস্কে দেয়ার ফলে বিস্মিত হয়েছেন। তিনি যে খুশিতে বিস্মিত হয়েছেন, তার সপক্ষে দলিল প্রয়োজন। অথচ ভাইটি অনুবাদখানা এমনভাবে করেছেন, সাধারণ জনতা ধরতে পারার কথা না। কিন্তু তিনিই আবার আমাকে বারবার অনুবাদে খিয়ানতের অভিযোগ করলেন। হতাশাব্যঞ্জক।

 

অভিযোগ ৯

//“ধ্বংস হোক তার মা! এ তো যুদ্ধের আগুন প্রজ্বলনকারী, কেউ যদি তার সাথে থাকতো!” – আল্লাহর রাসূলের ﷺ এই কথা শুনে আবু বাসীর (রা) বুঝে গেলেন যে রাসূল ﷺ তাকে ‘আবারও’ মক্কার কাফেরদের হাতে তুলে দেবেন। তিনি ধীরে ধীরে সেখান থেকে নিজেই বের হয়ে গেলেন।
লক্ষ করুন, যদি আল্লাহর রাসূলের ﷺ এই বক্তব্য দ্বারা ‘বাতেনী’ কোন সমর্থনও বোঝাতো তাহলে আবু বাসির (রা) এটা বুঝে নিতেন না যে আল্লাহর রাসূল ﷺ তাকে মক্কায় মুশরিকদের কাছে ফেরত পাঠাতে চান।//

তাদের মন্তব্যঃ ইবনু বাত্তাল রহ. এর উপরিউক্ত বক্তব্য স্মরণে রাখলে এই ফিকহি তাখরিজের অসারতা আপনাআপনিই বুঝে যাওয়ার কথা।


উত্তরঃ

এই বক্তব্যের পূর্বের বক্তব্যগুলোর চাইতে ভিন্ন কিছু নয়। এখানেও সমর্থন বলতে হত্যার সমর্থন বোঝানো হয়েছে। আর ইবনু বাত্তাল পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। দুটো তো এক বিষয় নয়। অথচ লেখকের উপস্থাপনাই এমন, যেন আমি ইবনু বাত্তালের বক্তব্যকেই অস্বীকার করে পালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতকেও অস্বীকার করেছি। যা আমি করি নি।

 

অভিযোগ ১০

এরপর বলা হলো,

// একটি বিষয় লক্ষণীয়, এই বাক্যে এমন কী কথা আছে যে, যা শুনে আবু বাসির রা. যা বোঝার বুঝে ফেললেন এবং তিনি মদিনা ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন। মোল্লা আলি কারি রহ. বলেন –

(لَوْ كَانَ لَهُ) أَيْ: لِأَبِي بَصِيرٍ (أَحَدٌ) . أَيْ: صَاحِبٌ يَنْصُرُهُ وَيُعِينُهُ، وَقِيلَ مَعْنَاهُ لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ يَعْرِفُهُ أَنَّهُ لَا يَرْجِعُ إِلَيَّ حَتَّى لَا أَرُدَّهُ إِلَيْهِمْ وَهَذَا أَنْسَبُ بِسِيَاقِ الْحَدِيثِ

যদি তার এমন কেউ থাকতো, যে তাকে সাহায্য এবং সহযোগিতা করতো। বলা হয়েছে, এর অর্থ হলো, যদি তার এমন কেউ থাকতো, যে তাকে জানিয়ে দিতো যে, সে যেনো আমার কাছে আর ফিরে না আসে যাতে তাকে মক্কাবাসীর কাছে ফিরিয়ে দিতে না হয়। এই ব্যাখ্যাটিই হাদিসের পূর্বাপরের সঙ্গে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ।//

 

উত্তরঃ

আবারো সেই একই বক্তব্যের অবতারণা। অতি অবশ্যই আল্লাহর রাসূল ﷺ তাঁকে মুশরিকদের হাতে তুলে দিতে চান নি। তাঁর জীবন বাঁচাতে চেয়েছেন। সেটা আমরা একাধিকবার বলেছি। অতঃপর কেন বারবার এই বক্তব্য আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য লেখক সচেষ্ট হলেন তা স্পষ্ট নয়।

 

অভিযোগ ১১

// অনুবাদের কারচুপি সম্পর্কে এরপর আর বলার কিছুই থাকে না।//

 উত্তরঃ

আল্লাহ তাঁকে রহম করুক। মুসলিম ভাই এর বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ আনার ব্যাপারে আল্লাহকেই আমাদের মাঝে সাক্ষী রাখলাম। ইনশাআল্লাহ।

 

অভিযোগ ১২

এরপর বলা হলো

//আল্লামা ইবনু হাজারের বক্তব্য উল্লেখ করে নাজমুস সাকিব ভাই বলছেন— “কিন্তু এই ব্যাখ্যায় এটা মোটেও স্পষ্ট নির্দেশ করে না যে, আল্লাহর রাসূল ﷺ এই কর্মকে অনুমোদন দিয়েছেন বা জিহাদ আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর কোন সাহায্যকারী থাকতো বা শক্তি যোগানদাতা থাকতো বলে আফসোস করা মানে কি এই হয়ে গেলো যে তা রাসূল ﷺ অনুমোদন দিয়েছেন? অথচ আল্লাহর রাসূলের ﷺ বক্তব্যে ফুটে উঠেছে আফসোস। যদি তার এই ‘সফল’ হত্যাকান্ডের অনুমোদন থাকতো, তাহলে কি আল্লাহর রাসূল ﷺ এর জন্য আফসোস করতেন?

বরং এইখানে রাসূল ﷺ, নিজেই বলছেন তাঁর মা ধ্বংস হোক! এর দ্বারা বোঝাই যায়, তিনি তাঁর এই কর্মতে অপ্রত্যাশিতভাবে বিস্মিত হয়েছেন ও তাঁকে যুদ্ধের আগুন প্রজ্বলনকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।”

অনুবাদের বিষয়টি তো পূর্বেই উল্লিখিত হলো। দ্বিতীয় বিষয়টি— অর্থাৎ তিনি কী বুঝে সিফুল বাহরের দিকে যাত্রা করলেন এবং তা কীভাবে বুঝলেন? এ ব্যাপারে আমরা মোল্লা আলি কারি রহ. এর বক্তব্য দেখতে পারি—

মোল্লা আলি কারি রহ. বলেন –

(عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ) ، قَالَ الْقَاضِي: إِنَّمَا عَرَفَ ذَلِكَ مِنْ قَوْلِهِ: مِسْعَرَ حَرْبٍ لَوْ كَانَ مَعَهُ أَحَدٌ، فَإِنَّهُ شَعَرَ بِأَنَّهُ لَا يُؤْوِيهِ وَلَا يُعِينُهُ، وَإِنَّمَا خَلَاصُهُ عَنْهُمْ بِأَنْ يَسْتَظْهِرَ بِمَنْ يُعِينُهُ عَلَى مُحَارَبَتِهِمْ

তিনি তা বুঝেছেন “যুদ্ধের আগুন প্রজ্জ্বলিতকারী, যদি তার কেউ থাকতো” শব্দসমষ্টি থেকে। কেননা তিনি আঁচ করেছেন যে, রাসূল ﷺ তাকে আশ্রয় দেবেন না, সহযোগিতাও করবেন না। আর তার মুক্তির একমাত্র পথ হলো, তার সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নিয়ে মক্কাবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। //
উত্তরঃ

মোল্লা আলি ক্কারি এখানে তা-ই উল্লেখ করেছেন যা আমরা আগেও আলোচনা করেছি। এখানে বলাই হচ্ছে দ্বারা ইশারা করা হয়েছে যাতে তিনি পালিয়ে যান ও সংঘবদ্ধ হয়ে থাকেন, যাতে কুরাইশদের হাত থেকে তিনি বাঁচতে পারেন। এখানেও এটা উল্লেখ করা হয় নি, যে এর দ্বারা আল্লাহর রাসূল ﷺ আবু বাসিরের (রা) প্রাথমিক হত্যাকান্ডকে অনুমোদন দেন।

 

অভিযোগ ১৩

এরপর উল্লেখ করা হয়,

// উল্লেখ্য, এখানে সাহায্য করার দ্বারা তা যুদ্ধের আগুন উসকে দেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য উদ্দেশ্য। অর্থাৎ তারা মদিনার বাইরে গিয়ে কী উদ্যোগ নিতে পারে সে ব্যাপারে ছোট্ট একটি ইঙ্গিত। মুহাদ্দিসগণের বক্তব্য থেকে বিষয়টি সহজেই অনুমেয়।//

উত্তরঃ সেই একই বিষয়ের পৌনপুনিক পুনরাবৃত্তি।

 

এছাড়াও ইয়ামনা’উ এর অর্থ নিয়ে অভিযোগ তোলা হলো। যদিও আমি প্রকাশ্যে মানা’আ এর অনুবাদের সপক্ষে আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করেছি। এটা জানার পরে ও দেখার পরেও কারচুপি, খিয়ানত, মিথ্যাচার ইত্যাদি অভিযোগ করা কতটা ইনসাফের কাজ, আল্লাহই ভালো জানেন। মানা’আ এর অনুবাদ রক্ষা করা হতে পারে, এটা আমার কাছে স্পষ্ট হবার ফলে আমি পর্ব-১ থেকে ইবনু বাত্তালের সেই পয়েন্টটি সরিয়ে নিয়েছি। আমি চাই না, ছিদ্রান্বেষীগণ মূল আলোচনা ফেলে ছিদ্র নিয়ে মেতে থাকুক।

 

অভিযোগ ১৪

// ভাইয়ের বুঝের স্বল্পতা বা ***ইচ্ছাকৃত খেয়ানতের*** আরেকটি প্রোজ্জ্বল নমুনা এই ষষ্ঠ পয়েন্টটি। হাফিজ ইবনু হাজার এখানে একটি মাসআলা সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন, আবু বাসিরের (রা) হাদিসের এই ***বিধানটি*** হানাফিদের মতে মানসুখ। অর্থাৎ এখন আর এই হাদিস থেকে ***সেই বিধানটি*** উদ্ঘাটন করা যাবে না। //

উত্তরঃ  আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুক। আমি কখনো বলিনি **হানাফিদের মতে এই বিধানটি মানসুখ** । পাঠক আমার পর্ব -১ পড়ে আসলে স্পষ্ট বুঝবেন এটা আমার ওপর সম্পূর্ন মিথ্যাচার।

দেখুন আমি কী লিখেছিলাম।

// পুনশ্চ: ইবন হাজার রাহিমাহুল্লাহ, তার ফাতহুল বারীতে এটাও উল্লেখ করেছেন, যে হানাফিগন আবু বাসিরের (রা) **এই ঘটনাকে** মানসুখ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

واختلف العلماء هل يجوز الصلح مع المشركين على أن يرد إليهم من جاء مسلما من عندهم إلى بلاد المسلمين أم لا ؟ فقيل : نعم على ما دلت عليه قصة أبي جندل وأبي بصير ، وقيل لا ، وأن الذي وقع في القصة منسوخ ، وأن ناسخه حديث أنا بريء من مسلم بين مشركين وهو قول الحنفية

বিশেষ করে এই প্যারা খেয়াল করুন,

وأن الذي وقع في القصة منسوخ ، وأن ناسخه حديث أنا بريء من مسلم بين مشركين وهو قول الحنفية

ইবনে হাজার নিজেই বলছেন যে মুশরিক দেশ থেকে কোন মুসলিম পালিয়ে আসলে মুশরিকদের সাথে বোঝাপড়া করে তাকে সেখানে ফেরত পাঠানো জায়েজ কি না-জায়েজ, এই নিয়ে উলামা কিরামের মাঝে ইখতিলাফ আছে। এক পক্ষ এই হাদীসের দলিল দিয়ে বলেন জায়েজ, আরেক পক্ষ বলেন এই হাদীসের **ফেরত পাঠানোর ঘটনা** মুশরিকদের মাঝে বাস করা মুসলিমদের কাছ থেকে আমি মুক্ত’ হাদিস দ্বারা মানসুখ হয়েছে। এটা হানাফিদের মত।

এর পরেই আমি বলেছিলাম,

ফলে এই ঘটনা থেকে যদি **মুসলিমদের ফেরত পাঠানো** তাখরিজ করা না হয়, তাহলে **কাফেরদের দেশে হামলা করা** তাখরিজ কীভাবে করা হবে? অর্থাৎ, মুসলিমদের মুশরিকদের কাছে ফেরত পাঠানোর মত ফিকহ তাখরিজ যদি হানাফিদের মতে এই ঘটনার কিয়াসে করা না যায়, তাহলে এই হাদীসকে ব্যবহার করে ৯/১১ এর ন্যয় হামলার দলিল সাব্যস্ত করার চেষ্টা কতটা যৌক্তিক? আমি নিতান্তই সোজাসাপ্টা প্রশ্নই করেছি। কিন্তু আমার বক্তব্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে আমাকে ভিলেনাইজ করার চেষ্টা করাটা কতটা ইনসাফ হলো? কোন সাধারণ মানুষ এই কাজ করলে মেনে নেয়া যায়। কিন্তু একজন আলিম, যিনি বুহতানের অর্থ বোঝেন, তাঁর কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না।

এক্ষেত্রে ইবনু বাত্তালের নিম্নোক্ত বক্তব্যকে প্রমাণ হিসেবে দেখানো হলো, যা মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ন নয়।

اختلف العلماء فى الأسير، هل له أن يقتل المشركين أو يخدعهم حتى ينجو منهم، فقالت طائفة من العلماء: لا ينبغى للأسير المقام بدار الحرب إذا أمكنه الخروج، وإن لم يتخلص منهم إلا بقتلهم، وأخذ أموالهم، وإحراق دورهم؛ فعل ما شاء من ذلك، وهو قول أبى حنيفة والطبرى

এখানে বলা হচ্ছে কাফেরদের কাছে বন্দী থাকা অবস্থায় যদি কেউ পালাতে নাই পারে, আর কাফেরদের হত্যা করা ছাড়া যদি তাঁর পালানোর উপায় না থাকে, তাহলে সে **আবু বাসির (রা) এর মত** তাদের হত্যা করে পালিয়ে যেতে পারবেন। এটা ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আত তবারি এর মত।

এই বিষয়ে আমরা কেউ দ্বিমত কখনো করি নি, যে একজন বন্দী মুসলিম নিজের দীন ও জান রক্ষার্থে পালিয়ে আসার জন্য এই পন্থার আশ্রয় নিতে পারবে। অথচ আমাদের ঐক্যমতের বিষয়টাকেই এইভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যাতে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় আমরা এতে দ্বিমত করেছি কোন কালে। আল্লাহ মাফ করুক।

আমার বক্তব্য ছিল, যদি ইবন হাজারের মতানুযায়ী হানাফিদের কাছে এই ঘটনা থেকে  **কাফেরদের সাথে বোঝাপড়া করে মুসলিম বন্দীদের ফেরত পাঠানো** তাখরিজ করা না হয়, যেহেতু এটা মানসুখ হয়েছে, সেহেতু **মুক্ত স্বাধীন কোন ব্যক্তি কাফিরদের দেশে গিয়ে তাদের মানুষদের হত্যা করা** কীভাবে তাখরিজ করা সম্ভব? আর এই মানসুখ হবার বিষয়টি তো আমি আবিষ্কার করি নি, ইবনু হাজার উল্লেখ করেছেন।

এবং বাস্তবতা হলো এটাই, যে সালাফ ও মুতাক্কাদ্দিমীন ফুকাহাদের মাঝে কেউ **মুক্ত, স্বাধীন, রাষ্ট্রীয় চুক্তির অধীন কোন ব্যক্তি, অন্য দেশের ভিসা গ্রহণ করে সেই দেশে গিয়ে সেখানকার কিছু মানুষ হত্যা করা জায়েজ** এই ফিকহ এই ঘটনা থেকে কেউ তাখরিজ করেছেন বলে আমার জানা নেই। তাই এইখানে ভিন্ন মাস-আলার ক্ষেত্রে আবু হানিফার কাউল উপস্থাপন করে বিষয়টিকে অন্য রূপ দেয়াটা সমীচীন হলো না। আল্লাহু আ’লাম।

পরিশেষে, আল্লাহর রাসূল ﷺ এই কতলের অনুমোদন দিয়েছেন ও সমর্থন করেছেন শীর্ষক দলিল উল্লেখ করা হলো মুতা-আখখিরিনের কিছু কিতাব থেকে, যার মাঝে আদ-দুরারুস সানিয়াও রয়েছে।

এখানে একাধিক পয়েন্ট উল্লেখ্য।

১) আমরা বিশ্বাস করি ইসলামের সবচাইতে বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা কেবল সালাফ ও মুতাক্কাদ্দিমিনদের কাছেই পাওয়া যায়। তাই তাদের কাছ থেকে কোন বক্তব্য না এনে কন্টেম্পরারি কিতাব থেকে রেফারেন্স দেয়াটা সঠিক হলো না। বুনিয়াদী হক্ক যে কোন কিছুই সালাফদের কাছ থেকে সত্যায়িত হয়ে থাকে। সন্দেহজনক বিষয়গুলোই কন্টেম্পরারি আলোচনায় খুঁজতে হয়। তাই তো সেই শুরু থেকেই আমরা **সালাফ** এবং **মুতাক্কাদ্দিমীন ফুকাহা** এর স্পষ্ট বক্তব্য তালাশ করেছি যে **এই ঘটনা** থেকে **এইভাবে কোন স্বাধীন ব্যক্তি কাফের দেশে হামলা করতে পারবে** ফিকহ তাখরিজ কেউ করেছে কি না। কিন্তু এর জবাবে এখনো নিরবতা ব্যতীত কিছু লাভ হয় নি।

২) আমরা কোন নির্দিষ্ট দলের, মাযহাবের, জামাতের মুক্কাল্লিদ নই, যে **আমাদের ঘরানা** বললেই আমরা আনন্দে আত্মহারা হব। আমরা সত্যকেই পছন্দ করি। তাই আদ-দুরারুস সানিয়া গ্রন্থ থেকে রেফারেন্স দেয়াতে আমি মোটেও আশ্চর্য হই নি। কারণ,

(ক) সালাফদের বক্তব্যের বিপরীত হলে যে কারো বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। কন্টেম্পরারি কোন মত যদি সালাফ ও মুতাক্কাদ্দিমীনদের মতের বিরুদ্ধে যায়, কিংবা তারা যা বলেন নি, তা বলে, সেক্ষেত্রে আমাদের ওপর এটা মোটেও বাধ্যবাধকতা নেই সেটা বিনা বাক্যে গ্রহণ করার।

(খ) আদ-দুরারুস সানিয়া গ্রন্থের কিছু বিষয় উলামাগণ বাড়াবাড়ি বলে অভিমত দিয়েছেন। বিশেষ করে তাকফির ইস্যুতে। নাজদি দা’ওয়াতের আলোচনা-সমালোচনা উভয়ই উলামা কিরামের মাঝে বিদ্যমান। তাই সতর্কতার সাথে এই কিতাবের রেফারেন্স দেয়া প্রয়োজন।

(গ) **আপনাদের আলেম** কার্ডটা খুবই নিচুমানের প্রচেষ্টা। কোন আলেমকে আমরা পয়সা দিয়ে কিনে ফেলি নি। আহলুস সুন্নাহর প্রতিটা আলিমই আমাদের আলেম। তাদের সঠিক মত আমরা অনুসরণ করি, বেঠিক মত পরিহার করি। ভুল পেলে তা নিয়ে অযাচিত উত্তেজনা প্রদর্শন করি না। তাই **আমাদের** আলেম হোক আর মঙ্গল-গ্রহের আলেম হোক, সালাফদের মতের সাথে বৈপরিত্য থাকলে আমরা সম্মানের সাথে তা পরিহার করার অধিকার রাখি।

সর্বশেষ উল্লেখ করা হলো,

// আল্লামা ইবনু তাইমিয়া আর হাফিজ ইবনুল কায়্যিমের মত প্রসঙ্গেও একই কথা উল্লেখ করেছে فتاوى واستشارات موقع الإسلام اليوم। তাদের ইবারত—

أما أبو بصير فإنه لم يدخل في عهد النبي – صلى الله عليه وسلم – إذ رده إلى المشركين وفر منهم واجتمع إليه عصابة ممن أسلم من قريش، وهذا يدل على أن لكل دولة أو جماعة منفصلة بإمام ذمة مستقلة في العهود والأمان، وهذا اختيار ابن تيمية وابن القيم.

আবু বাসির (রা) নবি সা. এর আহদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, যেহেতু তিনি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন আর আবু বাসির (রা) তাদের থেকে পালিয়ে এসেছেন এবং তার চতুর্পাশে কুরায়শদের ইসলামগ্রহণকারী এক কাফেলা সমবেত হয়েছে। এটা প্রমাণ করে যে, প্রত্যেক রাষ্ট্র এবং প্রত্যেক জামাআত, যাদের আলাদা ইমাম রয়েছে, আহদ এবং আমানের ক্ষেত্রে তাদের যিম্মাহ আলাদা বলে বিবেচিত হবে। ইবনু তাইমিয়া এবং ইবনুল কায়্যিমের মত এটাই।//

লক্ষ করুন, এখানে কোন হত্যাকান্ডের অনুমোদনের আলোচনা নেই। বরং কৌতুহলের বিষয় হলো, এখানে لكل دولة أو جماعة দ্বারা বর্তমান যুগের বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আলাদা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দলিল উপস্থাপন করা যায়, যা আমাদের এই ভাইদের মতের বিপরীত। তারা তো বিভিন্ন রাষ্ট্রের বৈধতাকেই অস্বীকার করেন। এক খলিফার অধীনেই সব রাষ্ট্র থাকতে হবে বলেই দাবি করেন। এখানে বলাই হচ্ছে একেক রাষ্ট্রের নাগরিকের অধিকার, জিম্মাহ সেই সেই রাষ্ট্রের প্রধানের। যাই হোক, আবু বাসির (রা) এর হত্যাকান্ডের অনুমোদনের সপক্ষে এই বক্তব্যে তিনি কী পেয়েছেন বোধগম্য হলো না।

পরিশেষে আমি আবারও (সম্ভবত এগারো কি বারো তম বার) প্রশ্ন রাখছি,

আবু বাসিরের (রা) এই হাদিস থেকে সালাফ কিংবা মুতাক্কাদ্দিমীন ফুকাহা কিরাম স্পষ্টভাবে, কোনরূপ সন্দেহ; আলোচনার সুযোগ ব্যতিরেকে প্রকাশ্য দিবালোকের মত স্বচ্ছতার সাথে এই ফিকহ তাখরিজ করেছেন কি না, যে

আবু বাসির (রা) এর অনুসরণে যে কোন ব্যক্তি যদি একজন মুক্ত, স্বাধীন নাগরিক হিসেবে কোন বিদেশি কাফির অধ্যুষিত রাষ্ট্রে তাদেরই ভিসা নিয়ে প্রবেশ করেন (যা তার রাষ্ট্র ও সেই রাষ্ট্রের মাঝে চুক্তির প্রমাণ) এবং তাদের সাধারণ নাগরিকদের অতর্কিত হামলা করে হত্যা করেন, তাহলে এটি সম্পূর্নরূপে জায়েজ ওয়া লা শাক্কা ফিহ।     

এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।

 

ওয়াল্লাহু আ’লাম।

Leave a comment

Create a free website or blog at WordPress.com.

Up ↑